হারবার্ট: মুভি রিভিউ
Movie: Herbert
Directed by: Suman Mukhopadhyay
Based on: Nabarun Bhattacharya’s novel Herbert
Starring : Subhasish Mukhopadhyay, Lily Chakravarty, Sabyasachi Chakraborty, Biswanath Basu, Kabir Suman.
Release dates: 2005
Country: India
Language: Bengali
হারবার্ট কি একটি নি:সঙ্গ, উন্মাদপ্রায় ব্যক্তিচরিত্র প্রধান গল্প? নাকি গল্পের ছলে রাজনৈতিক সমালোচনা?
এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় ছবিটির একেবারে শেষ দৃশ্যে যখন পুলিশ অফিসার বলেন, “সে গর্ভমেন্ট বলুন, পুলিশ বলুন আর স্টেট ই বলুন। কখন কোথায় কিভাবে বিস্ফোরণ ঘটবে। সেটা জানতে আমাদের এখনও অনেক বাকি আছে।”
নবারুণ ভট্টাচাযের আকেদেমি অ্যাওয়ার্ড জেতা উপন্যাস ‘হারবার্ট’ (১৯৯৭) নিয়ে থিয়েটার নির্দেশক সুমন মুখোপাধ্যায় ২০০৫ সলে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ছবিটি এর নির্মাণশৈলীর কারণে ব্যাপক সমালোচনায় আসে।
এ গল্পের নায়কের নাম হারবার্ট সরকার। ডাক নাম হারু। হারবার্ট সরকার ছোট বেলায় তার বাবা মা কে হারায়। বাবা ললিত সরকারের অঢেল সম্পত্তি থাকলেও ছোট হারুকে বড় হতে হয় নিতান্তই চাচার আশ্রয়ে, অনাদরে। উত্তর কলকাতার পাড়ার ছেলেদের সাথে খিস্তি খেওড় শিখে হারবার্ট সরকারের বেড়ে উঠা। পরিবারের অবহেলা ও হারবার্টের অনাগ্রহের কারণে ক্লাস এইট পড়া অবধি আর পড়া হয় না তার। হারবার্টের বড় চাচার বড় ছেলে কৃষ্ণ। তিনি পেশায় কলেজ শিক্ষক ও মার্কসবাদী। তার ছেলে বিনু হারবার্টের চেয়ে বয়সে একটু ছোট। হারবার্ট ও বিনু ছিলো খেলার সাথী।
বাবার নতুন চাকরির কারণে বিনু তার বাবা কৃষ্ণের সাথে এক সময় বহরামপুরে চলে যায়। হারবার্টের আরেক চাচা ধন্নার অমানবিকতা আর তার ফুট ফরমাশ খেটে। পরিবারে একাকিত্ব আর অসহায়েত্বের এ সময়টা জ্যাঠাইমার আদর ছিলো কিশোর হারবার্টের একমাত্র পাওয়া। হারবার্টের এ সময়টায় আরও একজন তার নি:সঙ্গতার সঙ্গী হয়, সে হচ্ছে পাশের বাড়ির নতুন ভাড়াটিয়া বুকি। বুকির সাথে হারবার্ট তার কিশোর বয়সের মনোদৌহিক সময়গুলো পার করে।
এর মধ্যে হারবার্টের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা ওর মনে গভীরভাবে দাগ ফেলে। হারবার্টের কাছের বন্ধু রবি প্রেমঘটিত কারণে পাড়ার ছেলেদের কাছে অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা করে। বন্ধু রবির মারা যাওয়া হারবর্টের জন্য ছিলো প্রচন্ড মানসিক আঘাত। বুকিও একসময় কলকাতা ছেড়ে চলে যায়। হারবার্ট হয়ে যায় আরও নি:সঙ্গ। হারবার্ট ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়ে ভূত প্রেত আর পরোলক সংক্রান্ত পড়ালেখার দিকে।
এর কিছু বছর পর বিনু কলেজে ভর্তি হবার জন্য আবার কলকাতায় ফিরে আসে। প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হবার পর, বিনু যুক্ত হয় নকশালবাদী আন্দোলনের সাথে। সরকার তখন নকশালবাদীদের চূড়ান্ত রুপে দমন শুরু করেছে। এক রাতে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে বিনু। অমানবিক জিঙ্গাসাবাদে সে প্রাণ হারায়।
এতগুলো কাছের মানুষকে হারাবার পর হারবার্টের মধ্যে অস্বাভাবিক কাজগুলো বেড়েই চলে। প্রায় রাতেই সে অদ্ভূত অদ্ভূত সব স্বপ্ন দেখতো। বিনু মৃত্যু শয্যায় হারবার্টকে বলেছিলো মা কালীল ছবির পিছনে তার একটা ডায়রি আছে। বিনুকে এক রাতে স্বপ্নে দেখার পর ডায়রির কথা মনে পড়ে হারবার্টের। কিছুটা অপ্রকৃতগ্রস্থ হারবার্ট ভেবে বসে বিনু স্বপ্নে বুঝি হারবার্টকে ডায়রির কথা বলে গেছে। বাড়ির লোকেরা যখন দেখলো হরবার্টের কথা সত্যি সত্যি। তারাও ভেবে বসলো হারবার্টে অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা আছে। হারবার্টের পাড়ার কিছু বন্ধুর উৎসাহে এই খবর ছড়িয়ে পড়লো এলাকায়। তারা শুরু করলো “মৃতের সাথে কথোপকথন” এর কাজ।
বহুলোক হারবার্টের দুর্বোধ্য অংসলগ্ন কথা শুনতে আসে। তারা ভাবে প্রিয়জনের সাথে কথা বলছে। এভাবে হারবার্টে আয় রোজগারের বড় একটা পথও খুলে যায়। একজন ব্যবসায়ী হারবার্টকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করার জন্য সংবাদপত্রে হারবার্টকে নিয়ে ফিচার ছাপেন।
সে ফিচার নজড়ে পড়ে যুক্তিবাদী সমিতির লোকদের। তারা হারবার্টকে ভন্ড সাব্যস্ত করে। হারবার্ট প্রতিবাদ করে। তবে তার মানসিকতা ভেঙ্গে যায়। হারবার্ট আর পরোলোক নিয়ে কাজ করতে চায় না। মানসিকভাবে বিপযস্ত হারবার্ট ব্লেড দিয়ে হাতের রগ কেটে এক রাতে আতহত্য করে। তার মৃত্যুর পর ঘটে এক অদ্ভূত ঘটনা। যখন তার মৃতদেহ দাহ করার জন্য চুল্লিতে ঢুকানো হয় তখন বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রেস, পুলিশ, প্রসাশন ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারণ উদঘাটন করার জন্য। কিন্তু বিস্ফোরণের সঠিক কারণ নির্ণয় করা অথবা হারবার্টে এতে ভূমিকা জানা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
ছবির শুরুটা বেশ নাটকীয় হারবার্টের জানালা দিয়ে দেখা যায় পশ্চিম বঙ্গের কমিউনিস্ট পার্টি চিহ্ন। বাইরের গলির পথ ধরে যুক্তিবাদী সংঘের লোকেরা হারবার্টকে নিয়ে ঠাট্টা মশকরার করতে করতে হেঁটে যাচ্ছে। এর পরই বিশাল এক মুভি ক্যামেরা ট্রলিতে নিয়ে হারবার্টে বাবা ললিত আর মা শোভা পাশ কাটিয়ে যায়। ললিত বলে উঠে অ্যাকশন। শুরু হয় হারবার্টে চিৎকার চেঁচামেচি আর গালিগালাজ। এই দৃশ্যটিকে সিনেমার ভাষায় বলে ব্রেখটীয় এলিয়েনেশন। যাতে দর্শক সিনেমায় মগ্ন হওয়া বা কল্পনায় হারিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকে। পুরো ছবিতেই বিভিন্ন দৃশ্য ললিত সরকার কে ক্যামেরা হাতে দৃশ্য নিতে দেখা যায় এবং বিভিন্ন মন্তব্য করতে দেখা যায়। যা হারবার্টে মৃত সাথের কথোপকথন ও সেই সাথে বাস্তবতা ও অবাস্থবতার পাশাপাশি অবস্থান নির্দেশ করে।
বন্ধুদের সাথে মদ্যপান শেষে আমরা হারবার্টের আত্মহত্যার দৃশ্য দেখি। ছবি শুরুর পর সতের মিনিটে ঘটা এই ঘটনাকে আবর্তন করেই পরবর্তীতে নানা সিকোয়েন্সের আর্বিভাব হয়। হারবার্টের মৃত্যুর সময় ছবিকে ফ্ল্যাশব্যাক করে নিয়ে যাওয়া হয় হারবার্টের শিশুবেলায় জন্মদিনের একটি অনুষ্ঠানে। জন্মদিনের পোশাক পরিচ্ছেদ আর বেশভূষা দেখেই অনুমান করা যায় হারবার্টের বাবার অর্থ বিত্তের অনুমান করা যায়। পরবর্তীতে একটি দৃশ্যে সে তার বড় ভাইকে টাকাও ধার দিতে দেখা যায়। ঘরোয়া আড্ডায় ললিত আর তার বান্ধবী রুবিকে নিয়ে মুখোরচক যেসব খবর রটেছিলো তার আমরা দেখি ললিত সরকার আর রুবির একসাথে সিনেমা দেখার মধ্যে। এই বান্ধবী রুবির সাথেই একদিন শুট্যিং শেষে হারবার্টে বাবা গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান।
হারবার্টে মায়ের মৃত্যু আর বেশি আকস্মিক ও অনভিপ্রেত। দেখা যায় হারবার্টে মা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে গেলে যখন কৃষ্ণ বলে, বাবা কাকিমা ছাদে অজ্ঞান পড়ে গেছে। তখন শিশু হারবার্ট হাততালি দিচ্ছে। যা দর্শকের মনোযোগ নষ্ট করে দেয়। ও বিরক্তি সৃষ্টি করে।
এরপর শিশু থেকে হারবার্টের কৌশর সময়টা কিভাবে কাটে তা আমরা দেখতে পারিনা তবে অনুমান করতে পারি। এ অংশটুকুতে হারবার্টদের পরিবারের বর্তমান অবস্থা দেখিয়ে দেয়া হয়েছে।
ধন্না হারবার্টের উপর কতটা কৃত্বতপরায়ণ সে হারবার্টকে দিয়ে অসৎ কাজ করায়। নকল লেখায় পরীক্ষায় পাশ করতে। কৃষ্ণের পরিবারের চেয়ে পার্টিতে মনোযোগ দেয়া কিশোর বিনুর সে বেলাতেই মুখে মুখস্ত স্লোগান, পুলিশের লাঠি ঝাঁটার কাঠি ভয় করেনা কমিউনিস্ট পার্টি।
হারবার্ট আর বিনুকে কৃষ্ণ একদিন থিয়েটারে ছবি দেখাতে নিয়ে যায়। সের্গেই আইজেনস্টাইনের ব্যাটেলশিপ পটেমকিন ছবিটির সেই বিখ্যাত ওডেসা স্টেয়ারকেস দৃশ্যটি দেখার সময় হারবার্টে চোখে মুখের অভিব্যক্তি ও রোমাঞ্জ সহজেই যে কারো নজড়ে পড়বে।
ছবিতে ন্যারেটিভ ছিলো ক্রমাগত অতীত আর বর্তমানের মধ্যে। ব্যবহার করা হয়েছে অনেক বেশি ফ্ল্যাশব্যাক। ফ্ল্যাশব্যাক দৃশ্য থেকে জাম্প কাটের মাধ্যমে ছবি আবার ফিরে আসে বর্তমানে। ফিরে আসার আগে কোন কোন ফ্ল্যাশব্যাক দৃশ্যের মধ্যেই শোনা যায় বর্তমান সময়ের কথাবার্তা বা সাউন্ডট্রাক। কখনো ব্যবহার করা হয় হারবার্টের স্বপ্ন দৃশ্য বা কল্পনা দৃশ্য। ছবির ন্যারেটিভে তাই ধারাবাহিকতা থাকে না। অতীত আর বর্তমানের বারবার যুগপৎ উপস্থাপন দর্শককে ছবির মনোযোগে বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দর্শক আর নিস্ক্রয় থাকতে পারে না।
ছবিটির প্রথম অর্ধেকের বাকি সময়টুকুতে আমরা বারবার পুলিশের জেরা দেখতে পাই। হারবার্টের জ্যাঠাইমা, ধন্না এদের সাক্ষাৎকারেও স্পষ্ট হয়ে উঠে না। আসলে পুলিশের মূল ভাষ্য কি অথবা হারবার্টেরই বা অপারাধ কি!
তখন একটি ফ্ল্যাশব্যাকে কিশোর হারবার্ট আর বুকির সম্পর্ক দর্শকদের নতুন আগ্রহের জন্ম দেয়। হারবার্ট একদিন বুকিকে তার প্রিয় জায়গটায় নিয়ে যায়। ছাদের উপর পানির ট্যাংকে সে যেখানে সময় কাটায়। বুকি যখন জানতে চায় কি করো এখানে? হারবার্ট জবাব দেয়, দেখি। ঘুড়ি দেখি, ফানুস দেখি, এরোপ্লেন দেখি, গামা ছাদে বাগান করে দেখি, বই পড়ি, লিখি, বড় রাস্তার গলির মুখে তুমি রোজ রিকশা করে স্কুলে যাও দেখি! সে কবিতা শোনায়, জলবায়ু বহে বেগে স্থল বায়ু ভালো নয়। অক্টোপাসের ভয় কি হয় কি হয়।
হারবার্টে বন্ধু রবি যখন পানিতে ভেসে ছিলো ব্যাকগ্রাউন্ডের বাদ্যযন্ত্র আর শেষ মুহুর্তে হারবার্টে কেঁপে কেঁপে উঠা যে কারো হৃদয় স্পর্শ করবে।
ছবির দ্বিতীয় অংশের প্রথম থেকেই শুরু হয় রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ। বিনুর কলকাতায় ফিরে আসা কলেজে গিয়ে সিঁড়িতে চোখ ফেরাতে হারবার্টের বাল্যবেলায় দেখা ওডেসা স্টেপের দৃশ্য ভেসে উঠে চোখের সামনে। যা সামনের দৃশ্যগুলোতে বিপ্লব আন্দোলনকেই নির্দেশ করে। দেখা যায় হারবার্ট বই থেকে পড়ছে আর পুলিশ নকশালবাদী আন্দোলনের সাথে জড়িত এক তরুণকে যা পালা বলে গুলি করে। যা দর্শকের মনে প্রভাব ফেলবে। বিনু বাস্তববাদী অপরদিকে হারবার্ট অলৌকিক বিষয়ে আগ্রহ বিশ্বাস করছে। তাদের সাথে কথার এক পযায়ে বিনু হারবার্টকে মা সে তুং এর বই থেকে পড়ে শোনায়। “আমাদের চোখের সামনে হাজার হাজার শহীদ মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের কথা মনে পড়লেই আমাদের প্রতিটি জীবিত লোকের হৃদয় বেদনায় ভরপুর উঠে। এমন কি স্বার্থ আছে যা আমরা ত্যাগ করতে পারবো না। এমন কি ভুল আছে যা আমরা শুধরে নিতে পারবো না?
কথাগুলো হারবার্টকে স্পর্শ করে। হারবার্ট ও বিনুর সাথে নকশালবাদী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। সে বিপ্লবীদের জন্য খাবার আনা নেওয়া করে পোস্টার লিখে, বিনু যখন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় তখন হারবার্ট বিনুর গোপন বইপত্র পুড়িয়ে পেলে। এখানের একটি দৃশ্য ললিত তার ছেলে হারবার্টকে দিনে দিনে রহস্যময় হয়ে উঠছে বলে ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখে রাখে। দেখা যায় হারবার্ট কমিউনিস্ট চিহ্ন দেয়া সামরিক পোশাক পড়ে গুলি চালাচ্ছে। এ দৃশ্যের মধ্যে দিয়ে মূলত ছবিটির পরিচালকের রাজনৈতিক অবস্থানই প্রকাশ পায়।
এক রাতে বিনু ও তার বন্ধু হঠাৎ বাড়িতে আসে। সেদিন ছিলো হারবার্টে জন্মদিন। হারবার্ট বিনু ও তার বন্ধুকে পায়েস খেতে দেয়। সে রাতেই বিনু বাড়ি ছেড়ে যায় এবং নকশালবাদী পোস্টার লেখার সময় পুলিশের গুলিতে গুরতর আহত হয়। এবং হসপিটালে পুলিশি জেরায় মারা যায়।
এরপর বিনুর ডায়রি পাওয়াকে কেন্দ্র করে হারবার্টের অন্যরকম জীবনযাত্রর শুরু হয়। “মৃতের সাথে কথোপকথন” শুরু করে হারবার্ট পঁয়সা কড়িও কামাতে শুরু করে। সে ধন্নার একপেশে অত্যাচার থেকে ও পরনির্ভশীলতা থেকে মুক্তি পায়। কিন্তু খুব বেশিদিন আর এভাবে চলে না। পত্রিকায় ফিচার ছাপার কারণে যুক্তিবাদী সমিতির চোখে পড়ে হারবার্ট। যা শেষ পযন্ত অপমান ও হারবার্টের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যুক্তিবাদী সমিতির লোকেরা উচ্চশিক্ষিত ও সমাজের সুবিধাভোগী শ্রেণীর লোক। তারা শুধু হারবার্টের মতো নিরীহদের ভন্ডামী ধরতে পারে। কিন্তু সমাজের বৃহৎ শক্তিগুলোর কোন ক্ষতি করতে পারে না। হারবার্ট যখন চিৎকার করে বলে ওরা বিনুকে গুলি করে মেরেছে। এ কথার অর্থ তারা বুঝতে অসামর্থ্য হয়।
হারবার্টে শেষকৃত্যর সময় ঘটে যাওয়া বোমা বিস্ফোরণের কারণ পুলিশ বের করতে পারে না। একজন অফিসার পোস্ট মর্ডান মনস্তত্ব উল্লেখ করে বলেন, সব অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তিই রাজণৈতিক দিক থেকে ভিন্নমতাবলম্বী।
ছবির শেষ দৃশ্য পরিচালক বোমা বিস্ফোরণের কারণ একটি ফ্ল্যাশব্যাকের মধে দিয়ে বুঝিয়ে দেন। হারবার্টের জন্মদিনের সেই রাতে হারবার্ট যখন রুমের বাইরে ছিলো। বিনু একটি ডিনামাইট হারবার্টের তোশকের নিচে লুকিয়ে রাখেন। সেই রাতেই বিনু ধরা পড়ে। ডিনামাইটের খবর কেউ আর জানে না। শব দাহ করার সময় সেসব যখন চুল্লিতে ঢোকানো হয়। সেখান থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে। মানুষের ক্রোধ ক্ষোভ কখন কোথায় কেন বিস্ফোরিত হবে তা কেউ জানে না। এই গূঢ়ার্থই প্রকাশ ঘটে।