ব্ল্যাকহোল কি? এটি কি পৃথিবী ধ্বংস করবে?
মহাবিশ্ব রহস্যময়। অন্ধকারচ্ছন্ন এ জগতের আরেক বিস্ময় কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাকহোল। ব্ল্যাকহোল শব্দটির প্রবর্তন করেন আমেরিকান পদার্থবিদ হুয়েলার। ১৭৮৩ সালে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিদ জন মিচেল সর্বপ্রথম এ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছিলেন। আলবার্ট আইনস্টাইন তার থিওরি অব রিলেটিভিটিতে ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বললেও তিনি এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না। বিজ্ঞানীরা পরবর্তীতে ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে সক্ষম হন।
ব্ল্যাকহোল কি ও কিভাবে গঠিত হয়?
বৃহৎ কিছু কিছু নক্ষত্রের মৃত্যুতে ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয় ও প্রচন্ড মহাকর্ষীয় শক্তি তরঙ্গের বিস্তার ঘটে। এর মধ্য থেকে কোন কিছুই, এমনকি আলোও বেরুতে পারে না। প্রচুর হাইড্রোজেন ভর সমৃদ্ধ নক্ষত্রগুলো ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হিলিয়ামে রুপান্তরিত হতে থাকে। নক্ষত্রের শক্তি ফুরিয়ে গেলে এটি বিস্ফোরিত হয়। ভর অতিরিক্ত সংকুচিত হয়ে জন্ম হয় ব্ল্যাকহলের।
সিঙ্গুলারিটি, ইভেন্ট হরাইজান ও স্পেগাটিফিকেশন
ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্র যেখানে সমস্ত ভর জমা থাকে সেটাকে বলা হয়, সিঙ্গুলারিটি। যে অঞ্চলটিতে শক্তি বিস্তার হয়ে থাকে সেটিকে বলা হয়, ইভেন্ট হরাইজন। গ্রহ, স্পেশশিপ বা আলো এই এলাকাটিতে যা যা আসবে সবই ব্ল্যাকহোলের শক্তির প্রভাবে সবই হারিয়ে যাবে। এই ঘটনাকে বলে স্পেগাটিফিকেশন।
কিভাবে ব্ল্যাকহোল খুঁজে বের করা হয়?
ব্ল্যাকহোল আলো শোষণ করে তাই সাধারণ চোখে এটিকে দেখা কখনো সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞানীরা বিশেষ স্পেস টেলিস্কোপ, গাণিতিক হিসেব নিকাশ ও পযবেক্ষণের মাধ্যমে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্ব প্রমাণ করে থাকেন।
ব্ল্যাকহোল কতটা বড় বা ছোট হতে পারে?
বিজ্ঞানীরা ধারণা করে থাকেন ব্ল্যাকহোল অতি ক্ষুদ্র যেমন পরমাণু আকৃতির ও হতে পারে, তবে তার ভর হবে পাহাড় সমান। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় যে ব্ল্যাকহোলটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, সেটি ১৭ বিলিয়ন সূর্য ভরের সমতুল্য ও পৃথিবী থেকে ২৫০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবিস্থত। ব্ল্যাকহোলটির নাম galaxy NGC 4889 blackhole.
ব্ল্যাকহোল কি পৃথিবী ধ্বংস করবে?
ব্ল্যাকহোল পৃথিবীকে খেয়ে ফেলার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। কারণ এগুলো পৃথিবীর সোলার সিস্টেম থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থিত। তাছাড়া আমাদের সৌর জগতের প্রাণ সূযও ব্ল্যাকহোলে রুপান্তরিত হবার কথা নয় বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানীরা। কারণ ব্ল্যাকহোল তৈরি হবার মতো বড় নক্ষত্র নয় সূর্য।