বিখ্যাত সব মায়েরা

0 1,053

আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন, যার একজন মা আছে সে কখনো দরিদ্র নয়। সব মা’ই সন্তানদের জন্য যতটুকু ত্যাগ স্বীকার করেন তার কোন তুলনা হয় না। তবে আজকের আয়োজন শুধু কিছু বিখ্যাত মায়েদের নিয়ে। যারা কর্মজীবনের সফলতার সাথে ব্যক্তি জীবনেও যোগসূত্র স্থাপন করতে পেরেছিলেন।

১. মেরি কুরি (Marie Curie)

বিজ্ঞান-মনস্ক ও বিদুষী নারীদের জন্য মেরি কুরি অনুপ্রেরণার নাম। তাকে বলা হয় নোবেলের রাণী। স্বামী পিয়েরে কুরির সাথে ১৯০৩ সালে প্রথম পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন মেরি। দুর্ঘটনায় স্বামী পিয়েরে কুরি মারা যাবার পরও তিনি তার দুই মেয়েকে লালন পালন করেন এবং গবেষণার কাজ চালিয়ে যান। রেডিয়ামম পোলোনিয়াম আবিস্কার ও বিশুদ্ধ রেডিয়াম পৃথক করার জন্য ১৯১১ সালে তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কার পান। বিজ্ঞানের দুটি শাখায় নোবেল জয়ী এ নারী ছিলেন সংগ্রামী ও পরিশ্রমী একজন মা। সে কথা আমরা অনেকেই জানি না। রসায়নে নোবেল জয়ী তার মেয়ে আইরিন জুলিয়েট কুরি (Irène Joliot-Curie) মায়ের প্রশংসা করে বলেছিলেন,  “মা আমাকে কাজের ক্ষেত্রে সবসময় স্বাধীনচেতা ও পরিশ্রমী হতে শিখিয়েছেন। বিজ্ঞানী হবার জন্য আমাকে কখনো জোর করেননি। তবে তিনি ছিলেন আমার অনুপ্রেরণা।”

২. জে. কে রাউলিং (J.K. ROWLING)

বিখ্যাত ফিকশন সিরিজ হ্যারি পটারের লেখিকা জে. কে রাউলিং ছিলেন একজ “সিঙ্গেল মাদার”। পর্তুগিজ টিভি সাংবাদিক জর্জ আরেন্টিস (Jorge Arantes) এর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মেয়ে জেসিকা মিটফোর্ডকে (Jessica Mitford) নিয়ে তাকে অবর্ণনীয় সংগ্রাম করতে হয়। তিনি যখন লন্ডনে বোনের আশ্রয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন তখন তার স্যুটকেসে হ্যারি পটার উপন্যাসের মাত্র তিন পাতা লেখা ছিলো। রাউলিং একই সাথে মেয়ের ভরণ পোষণ জুগিয়েছেন এবং লেখালেখি নিয়ে সংগ্রাম করছিলেন।   বর্তমানে তিনি জিঞ্জারব্রেড (Gingerbread) নামক একটি সিঙ্গেল মাদারদের সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক। সংগঠনটিতে রাউলিং নিয়মিত অর্থ অনুদান করে থাকেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাউলিং বলেন, আমি আমার জীবনের সে সময়টুকু ও পরিশ্রমের জন্য সবসময় গর্ব অনুভব করি।

৩. ইন্দিরা গান্ধী (INDIRA GANDHI)

জহওরাল নেহেরুর মেয়ে ইন্দিরা গান্ধীকে বলা যায় ভারতের “লৌহ মানবী”।  তিনি ১৯৬৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীত্ব লাভ করেন। পারিবারিক সূত্রে, রাজনীতিতে আসা এ নারী ব্যাক্তিত্বের দুই ছেলে রাজীব গান্ধী ও সন্জয় গান্ধী রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। গুপ্তঘাতকের হাতে মা ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধী (১৯৮৪) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। চল্লিশ বছর বয়সে রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতির প্রতি রাজীব গান্ধীর কখনোই মোহ ছিলো না। তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে আশার কোন ইচ্ছা তার ছিলো না। শুধু মায়ের শূণ্যস্থান পূরণ করতে চেয়েছিলেন তিনি।

৪. প্রিন্সেস ডায়না (PRINCESS DIANA)

ডায়না রাজপরিবারের সদস্য হলেও ছিলেন ব্রিটেনবাসীর মনের রাণী। দাতব্য কাজের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। এইডস, ভূমি মাইন বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অসংখ্য চ্যারিটিজ ও শিশু হাসপাতালে সাহায্য দিয়েছিলেন ডায়না। স্বামী প্রিন্স চার্লসের সাথে ডিভোর্স হলেও সন্তানদের জন্য ডায়নার ভালোবাসার কোন কমতি ছিলো না। তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন ও বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অর্থ সাহায্য দিয়ে থাকনে। উইলিয়াম মায়ের মৃত্যু বার্ষিকীতে জানান, মাকে তিনি সবসময় অনুভব করে থাকেন।

৫. অ্যাঞ্জেলিনা জোলি (ANGELINA JOLIE)

জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যান্জেলিনা জোলি তার মানবতবাদী কাজের জন্য প্রায়ই আলোচনায় আসেন। তিনি জাতিসংঘের, শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন। ব্র্যাড পি ও জোলি দম্পত্তির মোট ৬  সন্তান আছে। এরমধ্যে তিনজন এই দম্পত্তির আর বাকি তিনজন কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে দত্তক নিয়েছেন। প্রাক্তন স্বামী ও অভিনেতা ব্রাড পিট জোলির প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন, মা হিসেবে জোলির সবচেয়ে বড়গুণ, ও সন্তানদের সময় দিতো। অবসর পেলেই ও সন্তানদের নিয়ে বেড়িয়ে পড়তো।

Leave A Reply

Your email address will not be published.