নিয়ন আলোর নেশায়
তোমাদের এই শহরে আমি রাতের আগন্তুক
নিয়ন আলোর নেশায় মেতেছি,
ভালোবাসি তোমাদের শ্লেষা জড়ানো অট্টহাসি
যারা ল্যাম্পপোস্ট গুনতে ভালোবাসো।
দেখছি নিষ্পাপ শিশুদের মুখ,কি মায়া!
অধীর হয়ে চেয়ে থাকে,
যদি কারো মন গলে, তুলে দিতে চায় রাতের আহার্য,
শুনতে চায় অব্যক্ত মনের ভাষা।
কিন্তু দরদীরা রাত জাগে না।
রাত জাগে আত্মভোগী নেশাশিকারী,
আমি তাদের মুখে রেখার পরিবর্তন দেখিনা।
শুনিনা কন্ঠস্বর বাতাসে হামাগুড়ি দিতে।
শুধু এড়িয়ে গেছি ,বলেছি ভালো থেকো।
উৎসবমুখর রাতে,
তন্দ্রা আচ্ছন্ন করলে,এক অদ্ভুত সুগন্ধ আমাকে ডেকে তোলে।
বলে,ঘুমিয়ে পড়ো না।
এখনি উঠবে জেগে রাতের পুষ্পরা
মাতবে বন্য বিলাসিতায়।
তুমি ফিরে পাবে লুপ্তযৌবনের চেতনা।
আমার কথা হয় নিশিদেবীর সাথে
তিনি আমায় বলেন ঠোট নেড়ো না
চোখের ভাষায় চিনে নাও!
আমি নির্লিপ্ত!চেয়ে থাকি নিশিদেবীর চোখে
আয়শা,জয়িতা,স্বপ্না কত নাম!
নষ্ট নীড়ের সব মেয়েরা।।
তারা জানতে চাইতো পতিতা কাকে বলে?
আমি বলেছিলাম,কোথাকার আমি?কোথায় ভিড়ি?
কে আমার বাহুতে?কি ছিলো চরণে?
প্রশ্ন করো না,গ্রহণ কর।
যাবার বেলায় পরিচয় বলে দেব,
বিশ্বাস একে দেব কটকটে লাল ঠোটে।
আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম,দিয়েছিলাম তিতকুটে সান্ত্বনা।
বলেছিলাম তোমাদের অশ্রু বেচে আমার মৃত্যু কিনে দাও।
তোমরা কি জানো আয়শা কথা!
ছোট থাকতে মা বাবা হারা,
স্যাতস্যাতে পল্লীর মেয়ে।
আমার ভারী নি:শ্বাস সে খুব যত্ন করে গুণতো।
অতর্কিত ছোবলে পরখ করে নিত সমস্ত গভীরতা,
যেন,গুণী লিপিকরের ঘুমহীন রজনীর সমস্ত পরিশ্রম।
বিয়ে তাকে কি দিয়েছিলো?
কি হবে সন্তানদের পরিচয়?
কত সহস্রবার একই প্রশ্ন শুনেছি!
বিবেক বলছে,
তাই,সন্তানদের হাতে বই তুলে দেয়নি।
ছোটশিশুকে বারান্দায় ফেলে
দেহভোগী হিংস্র পুরুষ যখন তাকে নিয়ে যায়,
ঐ একই ঘরে,
তখন কি হয় সন্তানদের উপলব্ধি?।
আমি নিরব থেকেছি,
কেদেছি বার বার!